লেখালেখির সহজ নিয়ম কিংবা বলা যায় বড়রা বলে থাকেন, যে ভাবনা মনে উঁকি দেয়, হৃদয়ে দোলা দেয় তা কাগজের মসৃণ পাতায় লিখে ফেল। আর যাই হোক ভাবনাটা
হারিয়ে যাবে না।
সমাজের উল্টোসিধে কিংবা বেজালবোজাল দেখার পর মনের গুহায় অনেক ভাবনা
উদয় হয়। যা বেশিরভাগ সময় কাউকে বলা যায় না। গা বাচিয়ে চলাও মুষ্কিল হয়ে পড়ে। মহান
সৃষ্টিকর্তা মানুষ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। চাটুকার, মোসাহেব কিংবা দলান্ধ না হলে মানুষের ধাতে
কিছুটা হলেও শৈার্যশক্তি কাজ করে। সহ্য করতে না পারলেও কি আর করা, ঠেসেঠুসে সহ্যের বড়ি গিলতে হয়।
জাকারবার্গ ভাইজানের ফেসবুক আমরা সবসময় গরম রাখতে পছন্দ করি। শুধু
গরম বললে কিছুটা মানহানির ব্যাপারস্যাপার চলে আসতে পারে। আমরা শুকনো খড় দিয়ে আগুন
লাগিয়ে দেই। যা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে।
খাক খাক করে জ্বলে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায় আমাদের মন, মস্তিষ্ক।
আমাদের মুসলিম সমাজে মতবাদ,
ফেরকাবাদ এবং দলাদলি মাত্রাতিরিক্ত। পান থেকে চুন খসে পড়লেই একে
অপরের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজানোর খায়েশ প্রকাশ করতে এতটুকু দ্বিধা করি না। আগে
একসময় দেখা যেত, ওয়াজ মাহফিলে কিংবা নিজেদের তরিকার
সাপোর্টেড কোনো সেমিনারে বজ্রে কন্ঠে জোর প্রতিবাদ হতো। সেই প্রতিবাদী বক্তার
চেহারার ভঙ্গি, গলার অত্যুঙ্গ উচ্চস্বরে চারপাশ থমথম
করতো। শ্রোতা মহোদয়গণের মন, মস্তিষ্ক,
হাবভাব উন্মত্তের ভাব ধারণ করতো। আর যায় কই? বাতিলের মাথা, লেজ সব যেন কর্তন হয়ে গেল।
বর্তমান ডিজিটাল যুগেও কিন্তু সেইসব আছে। পুরোদমে বাতিলের ছাল-বাকল
উৎপাটন হচ্ছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে
প্রযু্ক্তি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে সবসময় আমাদের সমাজ আঁড় চোখে দেখেছে এবং দেখছে।
কিন্তু বাতিলের মোকাবিলায় প্রযুক্তিকে যুদ্ধের তীর্থভূমি তৈরি করা হচ্ছে। ফেসবুক
জিনিষটা কী? সেটা অনেকেই বলতে পারে না। তবে সেটা যে
নিজেদের মহান ক্ষেত্রভূমি এটা ফিলহাল সকলে খুব ভালো করেই জানে। অনেকেই তো মনে করে,
ফেসবুকটা আজ আমরা দখল করেই ফেললাম।
বাতিল শব্দটি আপেক্ষিক। যতটি ফেরকা, দল এবং উপদল আছে, তারা
একে অপরের কাছে বাতিল শক্তি হিসেবে পরিগনিত হয়ে আছে। বাতিল যেই হোন না কেন,
হয়তো সহোদর ভাইও হয়ে যেতে পারে। রক্ষা নেই। ভাব এরকম, একটা ঘা দেব না! আবার অনেক সময় নিজেদের দলের কাউকে বাতিলরূপে সকলের
কাছে পরিচয় করিয়ে তুলোধুনা শুরু করা হয়। মাধ্যম তো আমাদের আছে। ওয়াজের মাঠ আর
ইদানিংকালের ফেসবুক।
নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর পর সেজদার জায়গায় চোখ রাখা মাত্র যেন
ভিডিও স্ট্রিমিং শুরু হয়ে যায়। পৃথিবীর সমস্ত মুসলিমকে নিয়ে ভিডিও প্রতিবেদন তৈরি
করা হয়েছে। জায়গায় জায়গায় মুসলমান মার খাচ্ছে। ইহুদিরা মারছে, খৃষ্টানরা মারাছে, হিন্দুরা
মারছে, বৌদ্ধরা মারছে। আর আমরা আমাদেরকেই মারছি।
Comments
Post a Comment