কারো মৃত্যু বরণ নিয়ে আমার কোনোদিন আলাদা রকমের চিন্তা-ভাবনা কাজ করেনি। ভাব এরকম আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছেন। হয়তো কল্পনায় এরকম ছিল, যাদের ডেট এক্সপায়ার তারা তো যাবেই। কিন্তু আমার আব্বার মৃত্যু আমার মনোজগত পুরো উলট-পালট করে দিয়েছে। আমি আজ পর্যন্ত ভাবতেই পারি না, আমার আব্বা আমাদের মাঝে নেই। এজন্যই কিনা আজকাল কারো মৃত্যু সংবাদ শুনার পর খুব বিচলিত হয়ে পড়ি।
দুনিয়াটা যে আখেরাতের কাজের ক্ষেত্র, আয়েশ করার জায়গা না তা আমার আব্বার মৃত্যু আমাকে হাতে-কলমে শিখিয়েছে। আমি তাঁর মাঝে দেখেছিলাম, একজন স্বপ্নবাজ তরুণের প্রতিচ্ছবি। যে তার লক্ষ্যের পানে চোখ রেখে এগিয়ে চলে। কারো কূটনামি, দুশমনি, ষড়যন্ত্র ও অপবাদ আরোপ তাকে এতটুকু স্পর্শ করে না।
পরিবার, সমাজ ও কর্মক্ষেত্র, প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সমানতালে দাপুটে বিচরণ করতে পারতেন। সবার একটি নির্ভরতার কেন্দ্র ছিলেন। সবাইকে নিয়ে ভাবতেনও। তাঁর এ বর্ণাঢ্য চালচলনই আসলে তাঁর স্মৃতিকে ভুলতে দেয় না। এ অর্ন্তদান আসলে মেনে নিতে বড় কষ্ট হয়।
গতকাল আমার একজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ইন্তেকাল করেছেন। যে দু’চারদিন ক্লাসে উপস্থিত হয়েছিলাম। কেন যেন প্রতিবার তাঁর সামনেই পড়ে যেতাম। আমাকে উপলক্ষ করে রসাত্মক দু’চার কথাও বলতেন। হুজুরের পড়ানোর যোগ্যতা এবং ইলমের প্রাচুর্যের কথা আমার মুখে শোভা পায় না। কিন্তু একটি কথা আমার মুখে কিছুটা হলেও মানায়, আমার মতো চর্তুদিকে ডালপালা মেলা স্মৃতিতে তার এই দু’চার দিনের সবক এখনো পাওয়া যায়। আসলে যারা জ্ঞান বিতরণ করেন তারা তো অক্ষয় হয়েই থাকেন। তার ওপর ইলমে নববী। কেয়ামত পর্যন্ত এই সিলসিলা জারি থাকবে।

Comments
Post a Comment