আমি আমার
আব্বাকে যমের মতো ভয় পেতাম। শুধু আমি না। আমাদের গোষ্টির প্রায় সকলেই। তাঁর চাচাতো
বড়ভাইয়েরাও দেখতাম তাঁর সাথে কথা বলার সময় তো তো করা শুরু করে দেন। আমরা
ভাই-বোনেরা তো পানির গ্লাস কাছে রাখতাম। পারতপক্ষে তাঁর সামনে কেউ পড়তে চাইত না।
আসলে এটা হতো তাঁর বিশাল ব্যক্তিত্বের কারনে।
আমি সবসময়
চেষ্টা করতাম তাঁর থেকে ১০০ হাত দূরত্ব বজায় রাখতে। আসলে আমার আউল-ফাউল চলাফেরা
এবং কাজকর্ম এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী। একটি উদাহরণ দেই, নামায পড়ি আর না পড়ি ফজরের আজান হবার সাথে সাথেই আমার ঘুম ফিনিশ হয়ে
যায়। পাঞ্জাবী কোনো রকমে মাথা দিয়ে গলিয়ে টুপি একটি হাতে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে
যাই। তাঁকে কষ্ট করে আমাকে ডাকার সুযোগ দিতাম না।
কিন্তু কেন যেন
তার সাথেই আমার গভীর বোঝাপড়া ছিল। এমনিতে আমার সাথে তাঁর সম্পর্ক দায়সারা হলেও
কাজের ক্ষেত্রে দেখতাম আমাকে খুব মূল্যায়ন করতেন। অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজ আমাকে
দিয়েই করাতেন। এজন্যই কিনা মাঝে মাঝে মুহতামিমগিরির খাহেশ জাগ্রত হয়। হা হা।
কাজের ক্ষেত্রে
হোক বা পারিবারিকভাবেই হোক তাঁর সাথে আমার দেখা হতো। এখন তো আর হয় না। আর সেটা
সম্ভবও না। কিন্তু তাঁর স্মৃতিগুলো খুব বেশি কষ্ট দেয়।
তবে এখনো তার
দেখা পাই ঠিক আগের মতো। কাজকর্মের দরকার হলে যেমন আমার ডাক পড়তো। আমিও তেমনি কোনো
দরকারে তার সামনে মাথা উঁচু করে চোখ নিচু করে দাঁড়াতাম। স্বপ্নেও দেখি, আমাদের কেমিষ্ট্রিটা একই রয়ে গেল।
![]() |
মাওলানা আব্দুল মুমিন (রাহ.) |
Comments
Post a Comment