গান বাজনা+পান্তাভাত


অনেক দিন যাবত আমার ডেস্কটপ একটা জড় পদার্থ অবস্থায় ঘরের কোণায় পতিত ছিল। আজ একটা দ্রুতগতিসম্পন্ন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। প্রথমেই উচ্চ শব্দে ভিডিও গান প্লে করলাম। আহ, দেহ-মন পুরাই জুড়িয়ে গেল!

বেশকিছুসময় গানের তালে তালে ঘাড় বাঁকা-সোজা করে আমার উচ্ছাস প্রকাশ করলাম। হঠাৎ টের পাই, ক্ষিদায় পেটে চুঁ-চুঁ করছে। মনে হচ্ছে ছুঁচো দৌঁড়াচ্ছে। ছুঁচোর লম্ফজম্ফ থামানোর জন্যে গান স্টপ করি। কাল রাতে ভাত ভিজিয়ে রেখেছিলাম। ভাত রাতে ভিজানোর সময় পান্তা হয় নাকি সকালে বাসি হবার পর পান্তা হয়, জানি না। তবে এটা জানি এখন পান্তা ভাত খেতে হবে। মানে ফানি বাত। ধনি বাঙালিরা একদিন-ই জাকজমকের সাথে পান্তা খায়। যারা গরিব, তাদের প্রতিদিনই পান্তা-ডে। আমরা যারা ব্যাচেলার (কেয়ারটেকার টাইপ) তারা রান্নার নিদারুণ কষ্টে ডাল ভাত দিয়ে-ই দিন গুজরান করতে হয়। একটু তফাত আনার জন্যে সকালে পান্তা ভাত খাই। আসলে খাই না বলে গিলি বলাই বাহুল্য। কারণ পান্তাভাতের সুরতহাল দশর্ণে আমার মুখটা বিকৃত হয়ে যায়। তখন কেউ আমার মুখ দেখলে মনে করবে, আমার মতো দুঃখি, অসহায় এই সারা জাহানে আর একটিও নেই।


যাক, যা বলছিলাম। গানটা স্টপ করে যখন ওঠি। হঠাৎ একটা নারিকণ্ঠ আমার কানে আসল। বুঝলাম, আমার পাশের বাসা থেকে আসছে। আমি আবার মেয়েদের কথাবার্তা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনি। মহিলাটা চাপা বিরক্ত গলায়  বলছে, কিছুদিন একটু শান্তিমত ঘুমাতে পেরেছিলাম। আজ থেকে আর সেটা হবে না। ধাম ধাম করে গান বাজনা শুরু হয়েগেছে।

Comments