একটি রেষ্টুরেন্টে বসে চা খাচ্ছি। এক বড়ভাই ডেকে এনে খাওয়াচ্ছেন। তাঁর বিভিন্ন টাইটেল। কোনটা রেখে কোনটা বলি! তবে একটা টাইটেল চড়া গলায় বলা যায়। তিনি একজন আদর্শিক ইসলামিক লেখক। হালকা করে আরেকটা টাইটেল বলে ফেলি, তিনি বেশকিছু ম্যাগাজিনের সম্পাদকও। এগুলো কোনো প্রফেশনাল ম্যাগাজিন না। বিবাহ উপলক্ষে যে সব স্মারক টারক বের হয়; সেই গুলোর।
তিনি চায়ে গভীর এক চুমুক দিয়ে চেহারায় কঠিন দার্শনিক ভাব এনে বললেন, বুঝলে ইয়াহইয়া, ইসলামি ম্যাগাজিনের অনেক কদর। কিন্তু প্রকাশ করার কোনো ভালো ব্যবস্থা নাই। অর্থের অনেক সংকট। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, অর্থ দৌর্বল্য।
আমার কথা বলার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু আমাদের বংশের বড় একটা সমস্যা হল, কথা না বলে থাকতে পারে না। নসীহত-হেদায়ত আর বয়ান খুব বেশি চলে। খাবার না খেয়ে থাকতে পারব, কিন্তু এই মহাগুণগুলো এক মিনিটের জন্যে বিরতী দিতে পারব না।
তাই মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে না পেরে অন্যদিকে চেয়ে-ই বললাম, জি না ভাই। সমষ্টিগতভাবে বললে এই কথা বলব; অর্থ সমস্যা, মূল সমস্যা না। আপনাদের সমস্যা অন্য জায়গায়।
তিনি চোখ ছোট ছোট করে বললেন, অন্য সমস্যাটা কী?
আমি বিজ্ঞের ভাব ধরে বললাম, আপনাদের ম্যাগাজিনের পাঠক নেই। পাঠকের তীব্র সংকট। আর পাঠক থাকলে টাকা এমনিতেই আসে। অর্থ সংকট বলে বলে মাথা নষ্ট করার কিছু নেই।

আমি ফিক করে হেসে ফেললাম।
তিনি কুপালে বেশ কয়েকটা ভাঁজ ফেলে বললেন, হাসছ কেন? এখানে হাসির কী পেলে?
আমি বললাম, ভাইয়া, এরা সব হুজুগী পাঠক। প্রকৃত পাঠকসত্তার অধিকারী না। আপনি একটি গঠনমূলক লেখা ছাপাবেন _আত্মসমালোচনা হোক কিংবা সত্য বলার জন্যে হোক_ যা কোনোভাবে তাদের বিরুদ্ধে চলে যায়। দেখবেন, আপনার পত্রিকা ছাপাখানায় বান্ডিল বান্ডিল পড়ে আছে। একটুও ছুঁয়ে দেখার কাউকে পাবেন না।
Comments
Post a Comment