পোড়া আলু



গোপাল ভাঁড় বাজারে যাচ্ছে। হাতে বাজারের থলে। বাজারে ঢুকবার আগমুহুর্তে দেখতে পেল একটি বাড়িতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। দ্রুত কাছে এল। দেখল একটি আলুর গোদাম পুড়ে ছাই হয়েগেছে। সে ক্ষিয়তকাল এদিক-সেদিক তাকাল। তার চোখে-মুখে সমুদ্র জয়ের হাসি খেলে গেল। কাছের একটি ভুসিমালের দোকানে গিয়ে কিছু নোন চেয়ে নিল। আলুর গোদামের পাশে বসে গুণগুণ করে গান গাইতে গাইতে পোড়া আলু খেতে লাগল।

হঠাত তার চোখে পড়ল, তার হাত বিশেক দূরে একটি গাছের তলায় একটি লোক মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। গোপাল মুখে রসালো ভাব এনে ডাকল, ও ভাই, মাথায় হাত রেখে বসে আছ ক্যা? পোড়া আলু খাও। এমন দিন সারা জনমেও আসবে না।

লোকটি তার দিকে কটমট করে চেয়ে থাকে। এই পেট মোটা খাদক লোকটিকে কী বলবে কিছুই খুঁজে পাচ্ছে না। কোনো রকমে রাগ দমিয়ে রেখে বলল, ভাইসাব, কারো পৌষমাস কারো সর্বনাশ; কথাটা বোধহয় ভালই জানেন।

গোপাল মুখটা ভেটকি মাছের মতো করে বলল, হ্যা জানি। যার সর্বনাশ হয়েছে। সে দু:খ করুক গে। আপনার এতে কী আসে যায়?

লোকটা রাগ থামাতে না পেরে বলল, আরে ভাই, এই গোদাম তো আমার।

গোপাল মুখে দু:খ ভাব এনে জিহ্বা দিয়ে চুক চুক করে। কিন্তু পোড়া আলু পেটে চালান থামে না।

কিছু সময় নিরবে কাটে। হঠাত গোপাল বলে উঠল, ভাইসাব, আপনার কী আলুর গোদাম এই একটাই?

= না ভাই, আরো তিনটা আছে।

গোপাল চোখ বড় বড় করে বলল, আরো তিনটা! আপনি এত ধনি! আচ্ছা আপনার সেই আলুর গোদামগুলোতে আগুন লাগবে কোনদিন বলেন তো। আমি শিডিউল ঠিক রাখলাম। আর কি!

Comments