ছড়াকার হিসেবে পুরস্কারপ্রাপ্ত
লেখক নুমান মাহফুজ তার ফেসবুকের একটি পুরোনো স্ট্যাটাস দেখালো। গলা খাদে নামিয়ে বলল, এই লেখাটা পোস্ট করার কারণে অনেকের তির্যক মন্তব্য শুনতে হয়েছে। আমি লেখাটা কিছুটা পড়লাম। পড়েই বুঝতে পারলাম; এটা প্রেম সংক্রান্ত। আমি অনেক আগেই ফেসবুকে পড়েছি। তখনই আমি বেশ আগ্রহ নিয়ে-ই লেখাটা পড়ি। প্রেমের ব্যাপারে আমি বরাবরই একটু বেশি-ই উৎসাহী কিনা।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পুরুষরা মিনিটে দুই বার যৌন চিন্তা করে। সেখানে বারবার প্রেমের চিন্তা আসবে, এটা স্বাভাবিক নয় কি। কেউ প্রকাশ করছে কেউ করছে না। কেউ প্রেমে জড়িয়েও
যাচ্ছে। কিন্তু লেখকদের এই এক দুর্বলতা; নিজেদের অতি গোপনীয় ব্যাপার হেসে-খেলে বলে দেয়। নুমান মাহফুজ এ থেকে বাদ যাবে কেন?
এবার আসি আমার কথায়। প্রেম বিষয়ে লেখা আমাকে দারুণ রোমাঞ্চ দেয়। আমি উপভোগ করি। কল্পনায় সাজিয়ে রাখি। কিন্তু এই কল্পনায়-ই আমার প্রেম সীমাবদ্ধ। বাস্তবে করতে পারি না। কেন যে পারি না, তাও জানি না।
এই ব্যাপারে হুমায়ূন
আহমেদের একটি নাটকের সংলাপ বলি।
মামা, পুলিশ কি আপনাকে টপ সন্ত্রাসী ডিক্লেয়ার দিছে?
এখনো দেয় নাই। কেন যে দিল না এইটাই বুঝলাম না। হাটুর নিচের পোলাপান টপ টেরর রঙবাজ হয়ে গেল। আমি এখনো এখানে-ই পড়ে আছি।
এটা কিন্তু মামা, ইজ্জতের সওয়াল।
এই বছর দু-তিনটা বড়
কাজ করুম। এতে যদি কিছু হয়।
আমার এক বন্ধু প্রেম
করে। একজন দু’জনের সঙ্গে না। অনেক মেয়ের সঙ্গে। প্রায় সকলের সাথেই একেবারে লদকালদকি। মেয়েরা কেন যে তাকে পছন্দ করে এখনো বুঝতে পারি না। চরিত্র তো বুঝতেই পারছেন। চেহারা-সুরতও এমন রসগোল্লা
না যে দেখলেই প্রেম উতলে ওঠে। সে দুই মেয়ের সাথে
প্রেম করে। তারা পরস্পর বান্ধবী। সেই নেংটা কাল থেকে-ই। তারা প্রথমে বুঝতে পারে নি; তারা একে অপরের সতিন
হতে যাচ্ছে। যখন বুঝতে পারে। তখন আর দেরি না করে অ্যাকশনে নেমে পড়ে। তাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব চলে যায়। একটা-ই অভিযোগ। তুই আমার ইয়ের.....সাথে কথা বলিস কেন? আর কথা বললে শেষ করে ফেলব। কিন্তু আমার গুণধর বন্ধু উভয়ের সাথে প্রেম ঠিক-ই করে যাচ্ছেন।
সেদিন আমার এক চাচাতো বোন একটি মেয়ের সম্বন্ধে বলতে
গিয়ে বলল, মেয়েরা যে কত নির্লজ্জ ওই দেখ। জাস্ট বিয়ের কথা হচ্ছে। এখনো ফাইনালের ধারে কাছেও নাই। সে বরের ভাই-বোন-ভাবিদের
সাথে নিজে ফোন করে কথা বলে। দুই-চার মিনিট না। একেবারে ঘন্টার ওপরে। তাও আবার ন্যাকা ন্যাকা ভাব ধরে, শরীর মোচড় দিয়ে দিয়ে। বেহায়ার হদ্দ।
আমি চুক চুক করে আফসোসের
শব্দ করে বললাম,
আমার কপালটা আসলে-ই খারাপ। বয়স কি আর কম হলো। অথচ একটা মেয়ে এখনো চোখ তুলেও তাকাল না। আমার অর্ধেক বয়সের পোলারা ডজন ডজন প্রেম করে। বড়ই আফসোস!
সে রাগ এবং বিরক্তিভরে বলল, তুমিও ভঙ ধর। দেখবে কত্ত মেয়ে তোমার
পায়ে পায়ে ঘুরছে।
আমি শাকিব খানের স্টাইলে
রাখা চুলে হালকা হাত বুলিয়ে করুণ সুরে বললাম, আর কত ভঙ ধরব।
সে এবার রাগ এবং বিরক্তি প্রকাশ করল। কারণ তার চোখ ছোট ছোট হয়ে গেছে। কপাল, ভুরু থুত্থুরে বুড়ির মতো কুঁচকে গেছে। বলল, তুই তোর মার সোনা-দানা
চুরি করেছিস?
না
তোর আব্বার পকেট মেরেছিস?
আমি চিন্তায় পড়ে যাই। বাবার পকেট মারে না এমন ছেলে এই দুনিয়ায় পাওয়া যাবে? আমার মনে হয় না পাওয়া যাবে। চিন্তিতভাবেই বললাম, ছোট থাকতে কয়েকবার
মেরেছিলাম। একবার ধরা খেয়ে......।
সে মহাবিরক্ত হয়ে আমাকে থামিয়ে বলল, সে কথা আমি বলি নি। আগে যেটা করেছিস, সেটা পাঁচ-দশ টাকার
ব্যাপার ছিলো। এখন মানে চ্যাংড়ামীর বয়স হবার পর থেকে দুই
হাজার তিন হাজার মেরেছিস?
আমি গাল ফুলিয়ে বললাম, আরে ধুর। অতো টাকা সরালে তো
বাসা থেকে বের করে দেবে।
সে শক্ত করে আমার নাক চেপে বলল, তাহলে মেয়েরা তোমার দিকে তাকাবে কি করে? প্রেম কেন করবে? তাদের বয়েই গেছে তোমার সাথে প্রেম করতে। যতো হিরো ভাব ধর কাজ হবে না।
আমি বোকার মতো তার
দিকে চেয়ে থাকি। প্রেমের সাথে টাকার কী সম্পর্ক? প্রেমের গল্প-উপন্যাস অনেক পড়েছি। কিন্তু এই কথা তো পাইনি।
Comments
Post a Comment