শিশু


আমি তখন অনেক ছোট। ইবতিদায়্যাহ পঞ্চম, মুতাওয়াসসিতাহ প্রথম এবং দ্বিতীয়, এই ক্লাসগুলোতে যখন পড়তাম। সিটি পয়েন্ট কিংবা কোর্ট পয়েন্টে সভা-সমাবেশ থাকলে মাদরাসা থেকে ছাত্ররা মিছিল সহকারে সেখানে যেত। কিন্তু আমার মত ছোট যারা মাদরাসার বোর্ডিং থাকত, তারা যেতে পারতনা। তাই আমাদের অনেক দুঃখ ছিল। চিন্তা করতাম কখন বড় হব। মিছিল মিটিংয়ে যেতে পারব। শুধু মিছিল না, বড়রা যত কাজ নির্বঘে করতে পারে সব কাজ কোন বাধাঁ ছাড়া করতে পারব। তবুও আমরা লুকিয়ে চুকিয়ে চলে যেতাম। এমনও হয়েছে হুজুর জানতে পেরে মার দিয়েছেন।
আজ আমার এসব কথা বারবার মনে হচ্ছে। কারণ আর কিছু না। একটি মাসিক ম্যাগাজিনের একটা প্রতিবেদনে পড়ি যে, বর্তমানে শিশুদের বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি ভাবলাম, সাম্প্রতিক সময়ের যে সব আন্দোলন হয়েছে, এবং তাতে শিশুরা অংশগ্রহণ করেছিল তার কথা প্রতিবেদক বলবেন। আর বলেছেনও ঠিক। কিন্তু সে বলাটা একমুখো হয়েগেছে। শুধু হেফাজতে ইসলামের কর্মসুচীতে যে সব শিশু অংশগ্রহণ করেছেল, তার বর্নানা আর ছবি ছাপা হয়েছে। আরও যে সমাবেশ হয়েছে এবং তাতে শিশুরা ছিল তার কোন বর্ণনা নাই। হেফাজতের সভায় যে সকল শিশু ছিল, আমি ভালো করে দেখলাম, এরা আসলে শিশু নয়, কিশোর। কিন্তু গণজাগরণ মঞ্চে অনেক দুধের শিশুকেও তো দেখলাম। চার-পাঁচ বছরের শিশু তো তাদের রিজার্ভ ছিল। শরীরে রাজাকারের ফাঁসি চাই চিত্র এঁকে রাস্তায় শুয়ে, বসে রাখত। এটা কি শিশুদের প্রতি অপব্যবহার নয় কি?
আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট গ্যারান্টি দিতে পারি, হেফাজতের কর্মসুচীতে থাকা এসব শিশুরা (আসলে কিশোর) মাদরাসার চাঁপের মুখে আসতে বাধ্য হয়নি। নিজের ইচ্ছায় মাদরাসার কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দিয়ে এসেছে।
আর এরা আসায় যদি ইসলামি আন্দোলনের নেতাদের দোষারোপ করা হয় তাহলে গণজাগরণ মঞ্চের নেতাদের দোষ দেয়া হবেনা কেন?
আসলে বাংলাদেশ একমুখো নীতিতেই চলছে।

                                                             ১২-১০-১৩






Comments

Post a Comment